স্বদেশ ডেস্ক:
আরো ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কিনছে সরকার। এই দফায় ২০ লাখ এমআরপির সাথে ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েলও কেনা হবে। এজন্য মোট ব্যয় করতে হবে ৫৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। এই পাসপোর্টগুলো সরবরাহ করবে ‘আইডি গ্লোবাল সলিউশন লিমিটেড (সাবেক ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড)। আজ বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এই ক্রয় প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। মূলত ই-পাসপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় নতুন করে এই ২০ লাখ এমআরপি ক্রয় করা হচ্ছে বলে সূত্র জানিয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর কর্তৃক আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে এক কোটি ৫০ লাখ এমআরপি এবং দেড় কোটি লেমিনেশন ফয়েল ২৬৭ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার টাকায় যুক্তরাজ্যের ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সাথে ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পর ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর ২০১৩ সালের ১২ জুন একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী ডি লা রু ইন্টারন্যাশনাল দেড় কোটি এমআরপি ও দেড় কোটি লেমিনেশন ফয়েল সরবরাহ করেছে।
মন্ত্রিসভায় কমিটির বৈঠকের জন্য পাঠানো এ সংক্রান্ত একটি সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে পাসপোর্টের চাহিদা প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার। চলতি নভেম্বর মাসের ১২ তারিখে মজুদ পাসপোর্টের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৯১ হাজার ৯৯৩টি এবং লেমিনেশন ফয়েলের সংখ্যা ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০টি। দ্বিতীয় ভেরিয়েশন অর্ডার অনুসারে সরবরাহের অপেক্ষায় আছে ১৪ লাখ ৮ হাজারটি পাসপোর্ট বুকলেট, যা দিয়ে সর্বোচ্চ আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চাহিদা মেটানো সম্ভব হতে পারে। অন্য দিকে ‘ভেরিডস জিএমবিএইচ’র সাথে চুক্তি মোতাবেক পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ই-পাসপোর্ট চালু হয়ে সব আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে (দেশে ৬৯টি) এবং বিদেশে সব মিশনে (৮০টি মিশনে) চালু হতে আনুমানিক প্রায় ১৮ মাস সময় প্রয়োজন হবে। তবে প্রাথমিকভাবে আগামী ডিসেম্বর হতে ই-পাসপোর্ট চালুর সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে সব পাসপোর্ট অফিসে এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে ই-পাসপোর্ট চালু না হওয়া পর্যন্ত ১৮ মাস জনসাধারণের চাহিদা অনুযায়ী এমআরপি প্রদান অব্যাহত রাখতে হবে। ই-পাসপোর্ট চালুর পর পর্যায়ক্রমে এমআরপি ইস্যু কমে যাবে এবং ই-পাসপোর্ট ইস্যু বৃদ্ধি পাবে বলে সার-সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়েছে।
সার-সংক্ষেপে এ সম্পর্কে আরো বলা হয়েছে,‘নির্ধারিত সময়ে ই-পাসপোর্ট চালু করতে না পারায় প্রকল্প কার্যালয় হতে পাসপোর্ট বুকলেট আমদানি বিষয়ে মতামত গ্রহণ করা হয়। এ প্রেক্ষাপটে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর ২০ লাখ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট বুকলেট ও ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েল সরাসরি ক্রয়ের প্রস্তাব রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজন বিবেচনায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হলে গত ৩ অক্টোবর অর্থনৈতিক বিষয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করা হয়।
এই অবস্থায় ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রস্তাব মোতাবেক জরুরি প্রয়োজনে ও জনসাধারণের পাসপোর্ট চাহিদার বিষয়টি বিবেচনা করে পিপিএ বিধি-৬৮ অনুসারে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে সরাসরি ক্রয়ের মাধ্যমে ২০ লাখ পাসপোর্ট বুকলেট এবং ২০ লাখ লেমিনেশন ফয়েলের মোট মূল্য (ভ্যাট, এআইটি ও পরিহন খরচসহ) ৫৩ কোটি ৪ লাখ ৫৫ হাজার টাকা ক্রয় প্রস্তাবটি আজ ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হচ্ছে।